27 August 2024 , 11:17:05 প্রিন্ট সংস্করণ
মামলার ঢলে বাঁধ দিতে না পারলে পার পেয়ে যেতে পারেন প্রকৃত অপরাধীরা। যে ব্যক্তি সুনির্দিষ্টভাবে যে অপরাধে জড়িত, তার বিরুদ্ধে কেবল সেই ধরনের মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন আইনজীবীদের। তাদের মতে, ঢালাও মামলা এবং শত শত অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা আইনের শাসনের পরিপন্থি। গেলো ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ১৩ আগস্ট প্রথম মামলা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।
এরপর ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ১৩ দিনে শুধু ঢাকায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৯০টি। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন থানায় ৫৫টি এবং সিএমএম আদালতে ৩৫টি। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বাইরেও আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের প্রায় সবাই আসামি। হত্যা মামলায় আসামির তালিকায় আছেন ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান, নায়ক ফেরদৌস ও ব্যারিস্টার সুমনও; বাদ যাননি আপিল বিভাগের বিচারপতিও।
শুধু তাই নয়, ২৫ আগস্ট হওয়া এক হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে নায়ক জায়েদ খান, শাহরিয়ার নাজিম জয় ও বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিনকে। এছাড়াও, রয়েছে অজ্ঞাতনামা শত শত আসামি। যে কায়দা ও ঢংয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে মামলা হয়েছিল বিএনপির বিরুদ্ধে, একই কায়দায় ৫ আগস্টের পর মামলা শুরু হয় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেও।
১/১১-এর সময় যেভাবে দুর্নীতি মামলা ও ব্যাংক একাউন্ট জব্দ হয়, একইভাবে এবারও মামলা হচ্ছে। আইনজীবীরা বলছেন, এভাবে মামলা হলে পার পেয়ে যেতে পারেন মূল আসামিরা। এমন ঢালাও মামলা আইনের শাসনের পরিপন্থি বলেও মনে করছেন তারা। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়াই যারা মামলা করছেন, তাদের উচিত আইনজীবীর পরামর্শ নেয়া।
এভাবে এলোমেলোভাবে মামলা করলে প্রকৃত অপরাধ ঢাকা পড়ে যেতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে মামলা করা উচিত। অজ্ঞাতনামা দেড় হাজার বা দুহাজার জন কিংবা এ জাতীয় মামলা হলে প্রকৃত বিচারের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি হয়।হত্যা মামলাগুলোতে প্রমাণ সামনে আছে। কে গুলি করেছেন, আশপাশে কারা ছিলেন, কে নির্দেশদাতা — সেগুলো তো আছেই।
তাই সেগুলো দেখেই মামলা করা উচিত বলে মনে করি। সরাসরি সব অপরাধীকে সম্পৃক্ত না করে দূরবর্তী হলেও প্রকৃত অপরাধীকে সম্পৃক্ত করলে সেটি দুর্বার হবে। গত কদিনে হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের ২০ জনের বেশি ভিআইপিকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।