ভিন্ন স্বাদের খবর

এবার মৃত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলা যায় যে টেলিফোন বুথে

স্বজন হারানোর শোক মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারলেও তাদের স্মৃতি সহজে ভুলতে পারে না। তবে জাপানে এমন একটি টেলিফোন বুথ আছে যেখান থেকে নাকি মৃত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলা যায়। জাপানের টোকিও শহর থেকে দূরে এক পাহাড়ে এই বুথটি তৈরি করেন ইতারু সাসাকি নামে এক ব্যক্তি। তিনি তার এক নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুতে খুব কষ্ট পেয়েছিলেন।

তার শোক কাটিয়ে উঠতে দূরে এই পাহাড়ে এসে বসে থাকতেন। তিনি এই পাহাড়েই বুথটা তৈরি করেন এবং সেখান থেকে তার সেই আত্মীয়কে মিছেমিছি ফোন করেন, মনের কথা বলেন। এভাবে কিছুটা স্বস্তিবোধ করতেন তিনি।২০১০ সালে প্রথম এমন সংযোগবিহীন টেলিফোন বুথ তৈরি করেন। যাকে ইতারু বলছেন ‘উইন্ড ফোন’।

বাতাসে (উইন্ড) ভেসে না বলা কথা পৌঁছে যাবে প্রয়াত প্রিয়জনের কাছে, এমন ধারণা থেকেই এই নামকরণ। কাচের তৈরি বুথে রয়েছে আদ্যিকালের কালো রঙের এক টেলিফোন। সামনে নোটবই। সোনালি রঙের ডায়ালে ব্যবহারের দাগ স্পষ্ট। এখানেই এপারের লোকেরা কথা বলেন ওপারের লোকেদের সঙ্গে। ২০১১ সালের ভূমিকম্প ও সুনামিতে জাপানের তোহোকু শহরে প্রাণ হারায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ।

মাত্র আধাঘণ্টার মধ্যে শহরটি পুরো ধবংসস্তূপে পরিণত হয়। শহরের প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ মারা যায় এতে। তখন থেকেই জনপ্রিয়তা পায় উইন্ড ফোন। হাজারো মানুষ প্রতিদিন উইন্ড ফোনের কাছে ভিড় করতে থাকে। প্রিয়জনকে না বলা কথা ভাসিয়ে দেন হাওয়ায়। মন হালকা করেন মনের কথা বলে। আসলে এই টেলিফোনে কিন্তু কোনো সংযোগ নেই। মৃতদের সঙ্গে কথা বলা, পুরোটাই মানুষের কল্পনা।

মূলত স্বজন হারানোর ব্যথা মানুষকে সারাজীবন কষ্ট দেয়। নিজেকে সান্ত্বনা দিতেই এই কথোপকথনের অভিনয়টুকু করেন তারা। এই বিস্ময়কর ফোন বুথ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে, ওয়েলিংটনের একজন নার্স ওহিরো বে সৈকতে অনুরূপ একটি বুথ স্থাপন করেন। যেন সেখানকার শোকাতুর মানুষরা নিজেদের একটু সান্ত্বনা দিতে পারেন। অনেকেই আসছেন এবং ধীরে ধীরে এই বুথটিও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

আরও খবর

Sponsered content