জাতীয়

নির্দেশনা মানছেন না ব্যবসায়ী-আড়তদাররা

নির্দেশনা মানছেন না ব্যবসায়ী-আড়তদাররা

জেলা প্রশাসনের নির্দেশের পরও চট্টগ্রামের বেশিরভাগ বাজার, মুদির দোকান ও আড়তে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তালিকা টাঙানো হয়নি। ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা তাদের মর্জি মাফিক পণ্যের দাম আদায় করছেন। কিছু কিছু বাজারে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনার সময় ১০-১৫ মিনিটের জন্য তালিকা টাঙানো হয়। অভিযান শেষে ম্যাজিস্ট্রেট স্থান ত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে মূল্য তালিকাও উধাও হয়ে যায়।

এদিকে দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে হতাশ কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব।জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, গত সপ্তাহে বাজার মনিটরিং কমিটির সভায় বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, প্রতিটি দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তালিকা সহজে দর্শনীয় স্থানে টাঙিয়ে রাখতে হবে। পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ সরবরাহ এবং প্রতিটি পণ্য নির্ধারিত খুচরা মূল্যে বিক্রি করতে হবে।

ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ নির্দেশনা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ ট্রেড লাইসেন্স অথবা নিবন্ধন সাময়িকভাবে বাতিল ও পণ্য বাজেয়াপ্ত করা হবে।বুধবার নগরীর খাতুনগঞ্জ, রেয়াজউদ্দিন বাজার, চকবাজার, কাজির দেউরী কাঁচাবাজার, কালামিয়াবাজার, বহদ্দারহাট, পাহাড়তলি বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও মূল্যতালিকা টাঙানো হয়নি। এসব বাজারে মূল্যতালিকা না টাঙানোর সুযোগে গত সপ্তাহের তুলনায় চাল, চিনি, ভোজ্যতেল, মাছ, মাংস, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যের অতিরিক্ত মূল্য আদায় করা হচ্ছে।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রামের বাজারে বিভিন্ন পণ্যের মূল্য কেজিতে ৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ জন্য খুচরা ব্যবসায়ী, পাইকারী ব্যবসায়ী, মিলমালিক ও আমদানিকারকরা পরস্পরকে দোষারোপ করছে। মসুর ডালের মূল্য বেড়েছে ১০-১২ টাকা। চিনির দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৩-৪ টাকা। পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪-৬ টাকা, খোলা সয়াবিন তেলের দাম সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে লিটারে ২-৩ টাকা বেড়েছে। শুকনো মরিচ, আদা ও রসুনের মূল্য বেড়েছে কেজিতে ১০-১২ টাকা পর্যন্ত।একাধিক খেজুরের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, কোনো দোকানে মূল্য তালিকা টাঙানো হয়নি। সরকার নির্ধারিত দামেও বিক্রি করা হচ্ছে না।

নির্দেশনা অনুযায়ী, খুচরা বাজারে অতি সাধারণ ও নিুমানের খেজুরের কেজিপ্রতি দাম হবে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা এবং বহুল ব্যবহৃত জাইদি খেজুরের প্রতি কেজির দাম ১৭০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে থাকতে হবে। এ দামে কোথাও খেজুর বিক্রি হচ্ছে না। প্রতি কেজি জাইদি খেজুর ৩২০ থেকে শুরু করে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অতি সাধারণ ও নিুমানের খেজুরের সরকার নির্ধারিত দাম সর্বোচ্চ ১৬৫ টাকা। কিন্তু এসব খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকার বেশি দরে।কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন যুগান্তরকে বলেন, প্রশাসন আরও কঠোর ও তৎপর হলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যেত।

প্রশাসন প্রয়োজন অনুযায়ী তৎপর না হওয়ায় ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা সরকারের বেঁধে দেওয়া দর মানছে না। তারা ইচ্ছেমতো দামে পণ্য বিক্রি করছে।জেলা প্রশসানের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত যুগান্তরকে বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। একাধিক সভা করে ব্যবসায়ীদের ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ ও মূল্যতালিকা রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content