ভিন্ন স্বাদের খবর

ক্যান্সারে মৃত্যুর আগে প্রেমিককে বিয়ে করলো ১০ বছরের প্রেমিকা

বিয়ে নিয়ে কত শত স্বপ্ন থাকে মানুষের। এমা এডওয়ার্ডসেরও অনেক স্বপ্ন ছিল। তার বয়স মাত্র ১০ বছর। বাল্যকাল থেকেই জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান করে বিয়ে করার শখ এই বালিকার।সে ও তার প্রেমিক ডেনিয়েল মার্শাল ক্রিস্টোফার একবার তাদের স্কুলে বিয়ের অনুষ্ঠান করার কথা ভাবছিল। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষককেও জানিয়েছিল তারা। তবে প্রধান শিক্ষক স্কুলে বিয়ের অনুষ্ঠান করতে দিতে নারাজ।

অবশেষে গত ২৯ আগস্ট আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে বিয়ে হয়েছে তাদের। তার ১২ দিন পর, ১১ জুলাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে এমা এডওয়ার্ডস।রক্তের ক্যান্সার অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউক্যামিয়ায় (এএলএল) আক্রান্ত হয়েছিল এমা। ২০২২ সালের এপ্রিলে চিকিৎসকের কাছ থেকে এ খবর জানতে পারে তার বাবা-মা। খবর নিউইয়র্ক পোস্টের।

ড্যানিয়েল মার্শাল ক্রিস্টোফার উইলিয়ামস তার পরিবারের সদস্য ও বন্ধুবান্ধবদের কাছে ‘ডিজে উইলিয়ামস’ নামেই বেশি পরিচিত। ১২ বছর বয়সী ডিজে এমার বেশ ভালো বন্ধু ছিল।এমা’র মা-বাবা এলিনা এবং অ্যারন অ্যাডওয়ার্ডস দম্পতি নিউইয়র্ক পোস্টকে জানান, এমার দেহে প্রথমবার ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পর যে শারীরিক অবস্থা ছিল, তাতে তার মা-বাবা আশা করেছিলেন যে, এমা হয়তো ক্যান্সারকে পরাজিত করে সুস্থ হয়ে উঠবে।

কিন্তু জুনের শেষ দিকে এমা’র চিকিৎসকরা অ্যারন-এলিনাকে জানান, আর বড়জোর এক সপ্তাহ কিংবা তার কিছু বেশি দিন আয়ু রয়েছে তাদের মেয়ের।নিউইয়র্ক পোস্টকে এলিনা অ্যাডওয়ার্ডস বলেন, ‘এমার দিন ফুরিয়ে আসছে— এটি খুবই অপ্রত্যাশিত সংবাদ ছিল আমাদের জন্য। কারণ আমরা প্রায় নিশ্চিত ছিলাম যে, আমাদের মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠবে।

অন্য কোনো হাসপাতালে আরও উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে কিনা সেই খোঁজও নিয়েছিলাম, কিন্তু এমার মেডিকেল রিপোর্ট পর্যালোচনা করার পর কেউই আমাদের আশা দেখাতে পারেননি।এমা যে ডিজেকে পছন্দ করে এবং বড় হলে তাকে বিয়ে করবে— এ কথা একাধিকবার সে আমায় বলেছে। তাই তার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানার পর আমাদের (এলিনা-অ্যারন) মনে হলো তার শেষ দিনগুলোকে আনন্দপূর্ণ করে তোলা উচিত।

সেই অনুযায়ী এলিনা ডিজের মায়ের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলাপ করেন, ডিজের মা ও এ ব্যাপারে উৎসাহের সঙ্গে সম্মতি দেন। শেষে দুই পরিবারের যৌথ আয়োজনে গত ২৯ জুন বিয়ে হয় এমা-ডিজের।প্রায় ১০০ জন অতিথি উপস্থিত ছিলেন এই বিয়েতে। সবাই এমা-ডিজের বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজন। বিয়ের যাবতীয় আয়োজন-অনুষ্ঠানের দায়িত্বেও ছিলেন তারাই।

এলিনা বলেন, ‘চিকিৎসকরা এমার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানানোর পর খুব দ্রুত সবকিছুর আয়োজন করতে হয়েছে আমাদের। মাত্র দু’দিন সময় আমাদের হাতে ছিল এবং তার মধ্যেই খুব সুন্দরভাবে বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে।নিজের ‘জামাতা’ ডিজেরও আন্তরিক প্রশংসা করেছেন এলিনা। ডিজে সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি ডিজের মতো এত ভালো-মিষ্টি ছেলে আর কোথাও দেখিনি। তার হৃদয় স্বর্ণ দিয়ে গড়া এবং সে সত্যিই এমাকে ভালবাসে।

%d bloggers like this: