বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

কঠিন বস্তু আবিষ্কার হীরার চেয়েও

কঠিন বস্তু আবিষ্কার হীরার চেয়েও

কঠিনত্বের দিক থেকে হীরার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে, এমন এক বস্তুর খোঁজ মিলেছে গবেষণাগারে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট গবেষকদের দাবি, এই বস্তুকে কোনোভাবেই ভাঙা যাবে না। নতুন এই বস্তু মোটরগাড়ি ও নভোযানের প্রতিরক্ষামূলক আবরণ তৈরিতে কাজে লাগানো যাবে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এত দিন বোরন নাইট্রাইড ও সিলিকন কার্বাইড ছিল ল্যাবে তৈরি করা সবচেয়ে কঠিন পদার্থ।

এ সব যৌগ হীরার চেয়েও ১৮ শতাংশ কঠিন। কাগজে–কলমে তাদের চেয়ে কঠিন যৌগ হিসেবে আলোচিত ছিল কার্বন নাইট্রাইড। কয়েক দশক ধরে এমন বস্তু তৈরিতে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।নতুন বস্তুটি হীরার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম বলেই দাবি করা হচ্ছে। কার্বন ও নাইট্রোজেনকে চরম তাপ ও চাপে রাখলে ঘন বোরন নাইট্রাইডের চেয়ে শক্ত আকার ধারণ করে কার্বন নাইট্রাইড নামক উপাদানটি।

হীরার পরে দ্বিতীয় কঠিনতম উপাদান হিসেবে আলোচিত বোরন নাইট্রাইড।অ্যাডভান্সড ম্যাটেরিয়ালস জার্নালে প্রকাশিত নতুন গবেষণায় বিশ্বের সবচেয়ে কঠিনতম বস্তু হিসেবে নতুন এই বস্তু নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, নতুন যুগান্তকারী পদার্থটি গাড়ি ও নভোযানের প্রতিরক্ষামূলক আবরণ, উচ্চ–সহনশীল সরঞ্জাম, সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল, ফটোডিটেক্টরসহ নানা শিল্পে ব্যবহারের জন্য নতুন উপকরণ তৈরির সুযোগ সৃষ্টি করবে।

এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর কনডেন্সড ম্যাটার ফিজিকস অ্যান্ড কমপ্লেক্স সিস্টেমসের বিজ্ঞানী ডমিনিক ল্যানিয়েল বলেন, নতুন কার্বন নাইট্রাইড উপাদান প্রথম আবিষ্কারের পর নতুন উপাদান তৈরি করতে অনেক প্রচেষ্টা ছিল। গবেষকেরা তিন দশক ধরে অনেক কাজ করেছেন। উচ্চ চাপের মাধ্যমে তৈরি নতুন এই যৌগ তিন দশকের পরিশ্রম বাস্তবে পরিণত করেছে।

সাম্প্রতিক গবেষণায় নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। বিভিন্ন ধরনের কার্বন নাইট্রোজেনের পূর্বসূরি যেমন গুয়ানিডিন হাইড্রোক্লোরাইড (এইচ), থিওরিয়া (টি) এবং ইউরিয়াকে (ইউ) নিয়ে গবেষণা করেন তারা।এসব উপাদান ৭০ থেকে ১৩৫ গিগাপ্যাসকেলের চাপের মধ্যে রাখা যায়। এই চাপ আমাদের বায়ুমণ্ডলীয় চাপের প্রায় ১ মিলিয়ন গুণ বেশি। এসব পদার্থ ১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করা হয়।

এরপর বিভিন্ন যৌগের পারমাণবিক বিন্যাস বিশ্লেষণ করা হয়।দেখা গেছে, এ তিনটি যৌগ পদার্থের উচ্চ শক্তির ঘনত্ব আছে। অল্প পরিমাণে ভরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে শক্তি ঘনীভূত হয়। এই যৌগগুলোর সম্ভাব্য ব্যবহার হীরার প্রতিদ্বন্দ্বী বা বিকল্প হতে পারে। বিজ্ঞানী ডমিনিক ল্যানিয়েল বলেন, নতুন এই যৌগ উচ্চ চাপ সহনশীল। শক্তিশালী পদার্থ হিসেবে হীরার বিকল্পে ব্যবহার করা যাবে।