10 July 2024 , 3:51:53 প্রিন্ট সংস্করণ
আদালত বলেছেন, তাদের (শিক্ষার্থী) যদি কোনো বক্তব্য থাকে তবে তারা এখানে এসে বলতে পারে। এই আদেশের ফলে আন্দোলন করার কোন যৌক্তিক কারণ এখন আর তাদের নেই বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।বুধবার (১০ জুলাই) সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারির আদেশের পর এসব কথা বলেন তিনি।এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, মামলাটি ৭ আগস্ট শুনানির পরে আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন।
আপাতত আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলেছেন। অর্থাৎ যেমন আছে, তেমন থাকবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার কথাও আদালত বলেছেন বলে জানান আমিন উদ্দিন।এদিকে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষে ফিরে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি বলেছেন, যেহেতু হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছে, তাই এখন এটি পুনর্বিবেচনার এখতিয়ার আপিল বিভাগের। শিক্ষার্থীরা চাইলে তাদের বক্তব্য আদালতে তুলে ধরতে পারেন, তাদের বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।
বুধবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করে আপিল বিভাগ। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সাত আগস্ট পরবর্তী শুনানির আগ পর্যন্ত কোটা বাতিল থাকছে এবং এই সময়ে ২০১৮ সালের পরিপত্র অনুযায়ী নিয়োগ চলবে।অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, এরকম আন্দোলনে জনদুর্ভোগ হচ্ছে। আর মানুষের কষ্ট হলে রাষ্ট্রকেও দেখতে হয়।
এই কথাগুলো বিবেচনা করে আন্দোলনটি প্রত্যাহার করা হোক।এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিশেষ চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ শুনানি মুলতবির আদেশ দেন। ওইদিন রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী না থাকায় এক আবেদনে সর্বোচ্চ আদালত ‘নট টুডে’ আদেশ দেন।
পাশাপাশি হাইকোর্ট রায় পেলে রাষ্ট্রপক্ষকে রেগুলার আপিল (সিপি) দায়ের করতে বলা হয়।এর আগে বেসরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে গত ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল হয়।উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করে। সেখানে বলা হয়েছিল, ৯ম গ্রেড (আগের ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেড (আগের ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।
ওই পদসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা (নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ, উপজাতি ৫ ও প্রতিবন্ধীর ১ শতাংশ) পদ্ধতি বাতিল করা হলো।এই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। সে রিটের শুনানি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট।
সে রুল যথাযথ ঘোষণা করে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ বলে গত ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে ৪ জুলাই পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে বিষয়টি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করে দেন চেম্বার জজ আদালত।