19 May 2024 , 1:42:50 প্রিন্ট সংস্করণ
লিপস্টিক নারীদের প্রসাধনীর মধ্যে অন্যতম একটি। বিশেষ করে লাল লিপস্টিকের প্রতি নারীদের রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। গাঢ় লাল ঠোঁট যেন মুহূর্তেই চেহারায় আলাদা আভা এনে দেয়। মেরেলিন মনরো, টেইলর সুইফট থেকে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, দীপিকা পাড়ুকন সবাই আপামর বিশ্বের মন জয় করেছে লাল ঠোঠের মোহময় আবেদনে।বিশ্বের সব দেশের সব বয়সী নারীর পছন্দের লিপস্টিকের শেড এককথায় চোখ বন্ধ করে লাল।
তবে জানেন কি, উত্তর কোরিয়ায় এর ঠিক উল্টো ছবি। সেখানে লাল রঙের লিপস্টিক সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।উত্তর কোরিয়া বরাবরই কিম জন উনের প্রণয়ন করা উদ্ভট আইনের জন্য পরিচিত। এশিয়ার এই দেশটিতে তাদের সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের একচ্ছত্র একনায়কত্ব চলে। বিভিন্ন রকমের উদ্ভট নিয়ম আরোপ করেছেন যা মেনে চলা এককথায় অত্যন্ত কঠিন।
কিন্তু সেদেশে থাকতে গেলে সেসব উদ্ভট আইন মানতে হবে আপনাকে।নানাবিধ উদ্ভট আইনের মধ্যে ফ্যাশন সম্পর্কিত আইনও রয়েছে। সেখানকার লোকেরা যদি ফ্যাশন আইনগুলো মেনে চলতে ব্যর্থ হয় তাহলে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। উত্তর কোরিয়ায় বিশ্বের বেশিরভাগ জনপ্রিয় ফ্যাশন এবং প্রসাধনী ব্র্যান্ড নিষিদ্ধ। বিশেষ করে লাল রঙের লিপস্টক ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
উত্তর কোরিয়ায় লাল লিপস্টিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা শুধু ফ্যাশন নিয়ম নয়। এই আইনটি স্বৈরশাসকের আদর্শের গভীরে প্রোথিত। আসলে লাল রং প্রায়শই মুক্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। অন্যদিকে এটা বিশ্বাস করা হয় যে লাল লিপস্টিক পরা নারীদের আকর্ষণীয় দেখায় যা দেশে নৈতিক অবক্ষয় ঘটাতে পারে।যেহেতু উত্তর কোরিয়ার সরকার প্রধানত রক্ষণশীল মতাদর্শে চলে, তাই সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন লাল লিপস্টিক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
সেই সঙ্গে এমন একটি আইনও আরোপ করেছিলেন যেখানে নারীরা কেবল খুব সাধারণ মেকআপ করতে পারবেন।একটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার সরকার নারীদের মেকআপ পরীক্ষা করার জন্য অনেক লোককে নিয়োগ করেছে। ব্যক্তিগত ফ্যাশন সম্পর্কিত আইনগুলো যাতে অনুসরণ করা হয় তা নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন কৌশলও ব্যবহার করে।
কর্তৃপক্ষ রুটিন চেক পরিচালনা করে এবং কেউ যদি নিয়ম মানতে ব্যর্থ হয় তবে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। সেখানকার সরকার বিশ্বাস করে যে জনগণের উপর তাদের আধিপত্য বজায় রাখতে এবং বহিরাগত প্রভাব ঠেকাতে এই ধরনের পদক্ষেপ প্রয়োজন।এমনকি উত্তর কোরিয়াতে চুলের স্টাইল করার নিয়ম রয়েছে। নারীদের লম্বা চুল রাখা বা কোনো ধরনের হেয়ারস্টাইল করার অনুমতি নেই।
চুল ছোট এবং সুন্দরভাবে সাজানো থাকতে হবে সবসময়। কড়া নিয়মের সঙ্গে দেশটিতে চুলে রং করাও নিষিদ্ধ।দেশের সর্বোচ্চ নেতা পুরুষদের জন্য ১০টি এবং নারীদের জন্য ১৮টি সীমিত সংখ্যক চুলের স্টাইল করার অনুমতি দিয়েছেন। এ দেশের সব নাগরিক শুধু অনুমোদিত চুলের স্টাইল প্রয়োগ করতে পারে বা তাদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
এছাড়া উত্তর কোরিয়াতে ছেলেদের নীল জিন্স পরাও নিষিদ্ধ। সে দেশের শাসকের দাবি, নীল রং তাদের আমেরিকার কথা মনে করিয়ে দেয়, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।